-->

Watch Live Cricket



Live cricket streaming



ঢাকার ক্রিকেটে লঙ্কানদের মেলা!

এক স্কোরার হাসতে হাসতে কথাটা বলছিলেন—ঢাকা প্রিমিয়ার লিগকে তো এবার কলম্বো লিগ বলে মনে হচ্ছে!

কথাটা রসিকতা করে বলা হলেও নিতান্ত মিথ্যে নয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এবার শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের যে মেলা বসেছে, তাতে যে কারো ভ্রূ কুচকে যেতে পারে। নয় নয় করে গতকালকের আগ পর্যন্ত চলতি মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগের জন্য ১২টি দল ১৬ জন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারের রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছে; এর মধ্যে প্রথম রাউন্ডে মাঠেই নেমেছিলেন ১৫ জন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার। এছাড়া গত পরশু রাতে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন আরও তিন শ্রীলঙ্কান; যাদের রেজিস্ট্রেশন গত রাতে হওয়ার কথা।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গোড়া থেকে নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন, এমন প্রত্যেকে এক বাক্যে স্বীকার করলেন—এতো শ্রীলঙ্কার এর আগে কখনোই লিগে দেখা যায়নি। প্রশ্ন হল, এই গাদা গাদা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার আসায় আমাদের কি আদৌ কোনো লাভ হচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিদেশি খেলোয়াড় লিগে এলে অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রতিযোগিতা বাড়ায়; এসব উপকার হয়। কিন্তু এবারের শ্রীলঙ্কার এই বিশাল বাহিনীর ভেতর...............
থেকে সেই উপকারিতা পাওয়ার জায়গাটা অবশ্য খুব একটা দেখতে পাচ্ছেন না ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ, কোচ ও সাংবাদিক জালাল আহমেদ চৌধুরী।

এবার লিগে এই এক ঝাঁক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার আসার কারণটা এমন কিছু রহস্যময় নয়। মূলত গত প্রায় এক দশক ধরে ঢাকা লিগের বিদেশি কোটা পূরণের জন্য মূল ভরসা ছিলেন পাকিস্তানী ক্রিকেটাররা। এবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের টানাপোড়েনে পাকিস্তানী খেলোয়াড়রা আসতে পারেননি। বিকল্প হিসেবে উপমহাদেশের বাইরে থেকে দু'একজন ক্রিকেটার এলেও পাকিস্তানীদের জায়গাটা ভরাট করেছেন শ্রীলঙ্কানরা এসে।

বিদেশি খেলোয়াড়দের লিগে আসায় উপকারিতা দেখলেও এই যে বাধ্য হয়ে শ্রীলঙ্কা থেকে গাদা গাদা খেলোয়াড় আনা, এটাতে একটু নেতিবাচক দিক দেখতে পাচ্ছেন জালাল আহমেদ চৌধুরী, 'বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করলেও কিছু অভিজ্ঞতা বাড়ে। আবার তাদের ভালো পারফরম্যান্স আমাদের খেলোয়াড়দের বাড়তি ভালো করার জেদ তৈরি করতে পারে। কিন্তু সেই ব্যাপারটা হতে হলে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় চাই। এবার আমরা যেহেতু অনেকটা বাধ্য হয়ে শ্রীলঙ্কা থেকেই শুধু খেলোয়াড় আনতে পেরেছি, তাই সব যে সেরকম মানসম্পন্ন ক্রিকেটার এসেছে, সেটাও বলা যাবে না।'

অবশ্য ঢাকার ক্রিকেটের সঙ্গে শ্রীলঙ্কানদের সেই আদিকালের একটা দেয়া-নেয়ার সম্পর্ক আছে। ঢাকার ক্রিকেটে প্রথম যখন বিদেশিরা আসতে শুরু করল; তখন একমাত্র ভরসা ছিল ভারতের, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মাঝারি মানের খেলোয়াড়রা। এর পর বিভিন্ন দেশ থেকে দু'একজন তারকা এসে খেললেও প্রথম এসে টানা সফলতা পেলেন শ্রীলঙ্কার ফার্নান্দো রদ্রিগো; আশির দশকের শুরুতে আবাহনীতে কয়েক মৌসুম খেলেছিলেন তিনি।

ফার্নান্দোর এই সফলতা ক্লাবগুলোকে পরের বছরগুলোতে খুব শ্রীলঙ্কামুখী করে তুলেছিল। ফলে পরে আমরা সামারাসেকেরা, তিন ভাই রানাতুঙ্গা, রঞ্জন মাদুগালে থেকে সনথ জয়াসুরিয়া; অনেককেই দেখতে পেয়েছি ঢাকা লিগে। কিন্তু নব্বইয়ের মাঝামাঝি থেকে শ্রীলঙ্কানদের এই দাপট কমে যেতে থাকে গাদা গাদা পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের আগমনে।

এবার অবশেষে একটু কৌশলগত কারণে হলেও ঢাকার ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কানদের দাপট ফিরে এলো; কার্যত সবচেয়ে দাপট দেখা গেল। শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের তারকাদের মধ্যে মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা ছাড়া উল্লেখযোগ্য প্রায় সবাই এখন ঢাকায় চলে এসেছেন। তিলকরত্নে দিলশান, উপল থারাঙ্গা, জিহান মোবারক থেকে শুরু করে গত পরশু রাতে অধিনায়ক অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুসও চলে এসেছেন। ম্যাথুসের সঙ্গী হয়ে আইপিএল-চমক সচিত্রা সেনানায়েকেও চলে এসেছেন। বাকী থাকাদের মধ্যে সাঙ্গাকারা-থারাঙ্গা আসছেন বলে গুঞ্জন আছে।

এই তারকাদের কারণেই জালাল আহমেদ চৌধুরী আশাবাদী এই শ্রীলঙ্কানদের উপস্থিতি নিয়ে, 'একটা সময় তো ঢাকার ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ডের নাম করা খেলোয়াড়াও খেলে গেছে। গত ক বছর বরং আমরা এখানে মিডিওকোরদেরও বেশি দেখেছি। সে তুলনায় শ্রীলঙ্কান এই তারকাদের উপস্থিতি আমাদের তরুণদের জন্য বেশি উপকারী হবে। ইতিমধ্যে কিন্তু তারা প্রভাব ফেলতেও শুরু করেছে।' প্রথম রাউন্ডে ভানু রাজাপাক্ষের সেঞ্চুরি, জিহান মোবারকের ৫ উইকেট, দিলশানের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, তার ছোট ভাই সমপাথের ফিফটি মিলিয়ে কিছু প্রভাব দেখা যাচ্ছে; এটা মানতেই হবে।

এখন দেখার বিষয় এর মধ্যে কে কে আছেন সেই ফার্নান্দো, সামারাসেকেরাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নামেন!

No comments:

Post a Comment

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks